Wellcome to National Portal
জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৮ অক্টোবর ২০২৪

ইতিহাস ও কার্যক্রম

জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ)

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের চাহিদার ভিত্তিতে দক্ষতা উন্নয়ন সম্পর্কিত পরিকল্পনা ও সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে অভিন্ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম প্রণয়ন, বাস্তবায়ন, সমন্বয়, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করার নিমিত্ত জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৮ অনুযায়ী জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ আইন এবং এর অনুবৃত্তিক্রমে জারিকৃত জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন বিধিমালা-২০২০ এর আওতায় বাংলাদেশে দক্ষতা উন্নয়ন ইকোসিস্টেমের মৌলিক কাঠামোগত পরিবর্তনের লক্ষ্যে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ) ফেব্রুয়ারি ২০১৯ হতে কার্যক্রম শুরু করেছে। এনএসডিএ এর তিনটি বডি রয়েছে-কর্তৃপক্ষ, কার্যনির্বাহী কমিটি এবং গভর্নিং বোর্ড। গভর্নিং বোর্ডের চেয়ারম্যান মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা এবং কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি প্রধান উপদেষ্টার মুখ্যসচিব।

এনএসডিএ’র দায়িত্ব ও কার্যাবলি

জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৮ অনুযায়ী জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অন্যতম কাজ হলো- ১) জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতি, কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা, ২) বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/অধিদপ্তর/সংস্থা এবং বেসরকারী ও এনজিও পর্যায়ে পরিচালিত সকল দক্ষতা উন্নয়ন ব্যবস্থাকে সমন্বয় করা, ৩) দক্ষ মানব সম্পদ তৈরীর লক্ষ্যে সকল প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রশিক্ষণ পাঠ্যক্রম প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন সম্পর্কিত কার্যক্রম পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ণ করা, ৪) খাতভিত্তিক দক্ষতা তথ্যভান্ডার প্রতিষ্ঠা করা, ৫) দক্ষতার পূর্ব অভিজ্ঞতার স্বীকৃতি প্রদান, ৬) প্রতিষ্ঠানের মান উন্নয়ন, সনদায়ন ও পারস্পরিক স্বীকৃতির ব্যবস্থা করা, ৭) শিল্প দক্ষতা পরিষদ (Industry Skills Council) গঠন এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা, ৮) শিল্প সংযুক্তি শক্তিশালী করা, ৯) সকল দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন করা, ১০) জাতীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন তহবিল ব্যবহার সম্পর্কিত সুপারিশ প্রদান করাসহ দক্ষতার প্রচার প্রসার ঘটানোর মাধ্যমে অধিক সংখ্যক যুব সমাজকে দক্ষতা উন্নয়ন/প্রশিক্ষণে আগ্রহী করে তোলা। 

 

এনএসডিএ’র বর্তমান কার্যক্রম

দক্ষতা উন্নয়ন সংক্রান্ত বাংলাদেশ জাতীয় যোগ্যতা কাঠামো (বিএনকিউএফ) এর ১ থেকে ৬ স্তরের কোর্স এবং দক্ষতা সম্পর্কিত শর্ট কোর্স (সর্বোচ্চ ৩৬০ ঘন্টা) পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধনের দায়িত্ব, অকুপেশনভিত্তিক সনদায়নের নিমিত্ত কোর্স/ক্ষেত্রসমূহ চিহ্নিতকরণ, জাতীয় যোগ্যতা কাঠামোর আওতায় ১ থেকে ৬ স্তরের দক্ষতা প্রশিক্ষণ কোর্সসমূহের কম্পিটেন্সি স্ট্যান্ডার্ড (CS) ও কারিকুলাম প্রণয়ন, অনুমোদন ও বাস্তবায়ন-পরিবীক্ষণ, দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে ট্রেইনার, অ্যাসেসর, প্রশিক্ষণার্থী অ্যাসেসমেন্ট ও সনদায়ন এবং আরপিএল এর মাধ্যমে সনদায়ন প্রক্রিয়া এনএসডিএ সম্পন্ন করছে।

জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক দেশব্যাপি সরকারি-বেসরকারি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন কার্যক্রম চলমান। ইতোমধ্যে সরকারি/বেসরকারি পর্যায়ে ৯০০টিরও বেশি দক্ষতা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নিবন্ধিত হয়েছে। এনএসডিএ এখন পর্যন্ত ১৬৩টি কম্পিটেন্সি স্ট্যান্ডার্ড (CS), ২৫৭টি কোর্স অ্যাক্রিডিটেশন ডকুমেন্ট (CAD), ১০৩ টি কারিকুলাম, ২৩৪টি কম্পিটেন্সি বেজড লার্নিং ম্যাটেরিয়াল (CBLM) প্রণয়ন করেছে। বর্তমানে এ সকল কার্যক্রমসহ প্রশিক্ষণার্থীদের অ্যাসেসমেন্ট করার লক্ষ্যে অ্যাসেসমেন্ট পুল গঠনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। 

ন্যাশনাল স্কিলস পোর্টাল

কর্মসংস্থানের চাহিদা ও যোগানের রিয়েল টাইম ডাটা, গ্রাজুয়েট ট্র্যাকিং সহ অনলাইন নিবন্ধন, প্রশিক্ষণ মূল্যায়ন, প্রশিক্ষণার্থীদের অ্যাসেসমেন্ট ও সনদায়নের সুযোগসহ মোট ১৬টি মডিউল সম্বলিত ন্যাশনাল স্কিলস পোর্টাল (NSP) তৈরি করা হয়েছে।

পোর্টালে নিবন্ধন ও সনদায়ন হতে সকল প্রশিক্ষণার্থী ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের একটি সমন্বিত ডাটাবেজে শিল্প সংগঠনসমূহের অন্তর্ভুক্তি থাকবে। এতে শিল্প তার প্রয়োজনীয় দক্ষ জনশক্তি পোর্টালের মাধ্যমে সংগ্রহ করে নিতে পারবে।পোর্টালটির মাধ্যমে দক্ষতা সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরণের তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ, বিশ্লেষণ এবং স্বয়ংক্রিয় প্রতিবেদন প্রস্তুত করা সম্ভব হবে। পোর্টালটিতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন, বিভিন্ন পেমেন্ট গেটওয়ে এবং গুগল ম্যাপসহ বিভিন্ন কানেক্টিভিটি থাকবে। বিটিসিএল হতে skillsportal.gov.bd নামক ডোমেইন ক্রয় করা হয়েছে এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ন্যাশনাল ডাটা সেন্টারে হোস্টিং করা হয়েছে। 

 

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এনএসডিএ

২০১৭ সালে বাংলাদেশ WorldSkills International এবং ২০১৮ সালে WorldSkills Asia এর সদস্য পদ লাভ করেছে। রাশিয়ার কাজানে ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত ৪৫তম বিশ্ব দক্ষতা প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ পেস্ট্রি এন্ড কনফেকশনারি এবং ফ্যাশন টেকনোলজি –এ দুটি অকুপেশনে অংশগ্রহণ করেছে। World Skills Competition Switzerland-2022 এ বেকারি ট্রেডে ৮ম, ফ্যাশন টেকনোলজিতে ১৮তম এবং কুকিং ট্রেডে ২৯তম স্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশি প্রতিযোগীরা।

মন্তব্য

বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর। বাংলাদেশ বর্তমানে অনুকুল জনমিতিক সুবিধাভোগ করছে (demographic window of opportunity) যা আগামী ২০৩৩ সাল পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। প্রতিবছর ২.২ মিলিয়ন কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী শ্রমবাজারে যুক্ত হচ্ছে। কিন্তু শ্রম বাজারে যুক্ত হওয়া যুবশক্তিকে দক্ষ করে গড়ে তোলা সম্ভব না হলে এ জনমিতিক সুবিধাকে জনমিতিক লভ্যাংশে (demographic dividend) রূপান্তর করা সম্ভব হবে না। অন্যদিকে, বাংলাদেশের শ্রমবাজারের আরো একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট হলো-বৃহৎ অনানুষ্ঠানিক খাতের উপস্থিতি। মোট শ্রমশক্তির শতকরা ৮৫.১% অনানুষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত। এই শ্রমজীবী মানুষদের প্রায় এক তৃতীয়াংশের কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। তাই বৃহৎ অনানুষ্ঠানিক খাতের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক স্বল্প শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর দক্ষতা উন্নয়ন করে তাদেরকে শ্রমবাজারের উপযোগী করে গড়ে তোলা একটি বড় চ্যালেঞ্জ এবং সে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এনএসডিএ কাজ শুরু করেছে। সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত মানব সম্পদ তৈরীর মাধ্যমে ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত আয়ের দেশে পৌঁছানোর স্বপ্ন বাস্তবায়নে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।